সুড়ঙ্গ খুঁড়ে জেল পালানো গুজম্যানের খোজে ৩৮ লাখ ডলারের পুরষ্কার ঘোষণা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জেল পলাতক আসামীকে খুঁজতে নেমেছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর বেশ কয়েকটি ইউনিট। আকাশে চক্কর দিচ্ছে হেলিকপ্টার, বন্ধ রয়েছে বিমানের ফ্লাইট। তারপরও খোঁজ মিলছে না মোস্ট ওয়ান্টেড আসামি গুজম্যানের। এদিকে গুজম্যানের সন্ধানদাতার জন্য পুরষ্কার স্বরূপ ৩৮ লাখ ডলারের ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন জেল থেকে পালিয়ে যাওয়া মাদকস¤্রাট জোয়াকুইন গুজম্যানকে ধরতে সর্বাত্মক অভিযান চলছে। তবে সোমবার পর্যন্ত তার সন্ধান তো দূরের কথা কোনো ধরনের তথ্যও পায়নি মেক্সিকোর নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এর আগে গত শনিবার রাতে আলতিপ্লানো জেল থেকে পালিয়ে যায় ‘এল চাপো’ হিসেবে পরিচিত গুজম্যান। কারাগারের নিচ দিয়ে খোঁড়া প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা সুড়ঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যায় ৫৭ বছর বয়সী এই আসামী।সর্বশেষ কারাগারের গোসলখানায় দেখা গিয়েছিল গুজম্যানকে। পালানোর পর ওই গোসলখানার নিচে একটি সুড়ঙ্গের খোঁজ পায় পুলিশ। দেড় কিলোমিটার দূরে সুড়ঙ্গটির অপর অংশের খোঁজ পাওয়া যায়। সেখানে লাইট ও অনতিদূরে মোটরসাইকেল পেয়েছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, সুড়ঙ্গ দিয়ে পালানোর সময় লাইটটি ব্যবহার করেন গুজম্যান। এরপর ওই এলাকা ছাড়তে মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন তিনি।সুড়ঙ্গের অপর প্রান্তে একটি বাড়িতে অব্যবহৃত খাট ও রান্নাঘরের খোঁজ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে জড়িতরা খোঁড়াখুঁড়ির দিনগুলোতে ওগুলো ব্যবহার করত। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত বছর থেকেই ওখানে অবস্থান করছিল সন্দেহভাজনরা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার জেল থেকে পালালেন মেক্সিকো দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধপথে মাদক পাচারকারী ‘সিনালোয়া’ চক্রের নেতা গুজম্যান। গতবারের মতো এবারও এ ঘটনায় কারাগারের নিরাপত্তারক্ষীরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।প্রায় ১৭ মাস কারাভোগের মধ্যেই জেলের নিচ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ খোঁড়া ও সবাইকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় সন্দেহের তীর আরও জোরালো হচ্ছে। সন্দেহের কারণ আরও আছেÑ এর আগে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়েই পালিয়েছিলেন তিনি। ১০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি সম্পদের মালিক এই মাদকস¤্রাটকে ১৯৯৩ সালে গুয়েতেমালা থেকে প্রথম গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরই তাকে ২০ বছরের কারাদ- দেয় আদালত।সাজাভোগের প্রায় মাঝের দিকে ২০০১ সালে মেক্সিকোর পুয়েন্তে গ্রান্দ জেল থেকে পালিয়ে যান গুজম্যান। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে লন্ড্রির কাপড়বাহী গাড়িতে লুকিয়ে পালিয়ে যান তিনি। এরপর ২০১৪ সালে তাকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ ডলার পুরস্কারের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই বছরই গুজম্যানের নিজ রাজ্য সিনালোয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মেক্সিকোর পুলিশ।